কম্পিউটার কি বলতে কম্পিউটার হলো আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম বিস্ময়কর সেরা আবিষ্কার। কম্পিউটার আবিষ্কারের পর থেকে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। সামান্য লেখার কাজ থেকে মহাকাশের বিশাল কাজ কম্পিউটার দ্বারা করা হচ্ছে। গবেষণার প্রতিটা ক্ষেত্রে কম্পিউটার সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে। তাই কম্পিউটারের ব্যবহার এখন বিশ্বব্যাপী বেড়েই চলেছে। তাই আজ আমরা জানবো কম্পিউটার কি, কিভাবে কাজ করে, কি কি কাজে ব্যবহার হয় বিস্তারিত।
সূচীপত্র
কম্পিউটার অর্থ কি:
Computer শব্দটি ল্যাটিন শব্দ Compute শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ গণনা করা। সুতরাং বোঝা যায় কম্পিউটার অর্থ গণনা কারী যন্ত্র। তবে কম্পিউটার শুধু গণনা করার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় না বরং রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল, প্লেয়ার, টেলিফোন, ইমেইল, ইন্টারনেট সহ নানা ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। ইলেকট্রনিক্স মেশিনের কাজেই নয় আরো অনেক কাজে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটারের সাহায্য ছাড়া বিজ্ঞানের কাজ করা প্রায় অসম্ভব। তাহলে চলুন জেনেনি কম্পিউটার কি, কিভাবে কাজ করে, কি কি কাজে ব্যবহার হয়।
কম্পিউটার কাকে বলে :
কম্পিউটার হলো একটি আধুনিক ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র, যাতে মানুষের দেওয়া সব তথ্য উপাত্ত ডাটা যুক্তি সংগত নির্দেশ গ্রহণ করে বিভিন্ন বিশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গণনা, সম্পাদনা সহ গাণিতিক ও যৌক্তিক ভাবে বিবেচনা করে অতিদ্রুত এবং সঠিক বিচক্ষণতার সাথে নির্ভূল ফলাফল উপস্থাপন করে বা সংরক্ষণ করে কার্য প্রণালী সম্পূর্ণ করে বলে তাকেই এককথায় কম্পিউটার বলা যায়।
কম্পিউটারের বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
আধুনিক কম্পিউটার হলো বহুগুন সম্পন্ন বিজ্ঞানের বিশেষ একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র। এর উল্লেখযোগ্য বিশেষ বৈশিষ্ট্য গুলো হলো:
- নির্ভূলতার সাথে কাজ সম্পন্ন করা ক্ষমতা।
- দ্রুতগতির সাথে সম্পন্ন কাজ করতে পারা।
- কাজে সুক্ষ্মতার পরিচয় দেয়া।
- ক্লান্তিহীন ভাবে কাজের ক্ষমতা।
- যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত গ্রহনে সক্ষম ।
- অধিক স্মৃতি শক্তি সম্পন্নতা।
- স্বয়ংক্রিয়তার পরিচয়।
- নির্ভর যোগ্যতা প্রমাণ।
- বহুমুখিতা স্বয়ংক্রিয়তা প্রমাণ।
কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে :
কম্পিউটারের বহু বৈশিষ্ট্যর মধ্যে অন্যতম বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলোর কারণে মানুষ দিনে দিনে কম্পিউটার নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। যেমন-
- দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন করতে পারে।
- নির্ভূলতার সাথে কাজ সম্পন্ন ক্ষমতা।
- ক্লান্তিহীন ভাবে অধিক কাজের ক্ষমতা।
- অধিক স্মৃতি শক্তি সংরক্ষণ সম্পূর্ণতা।
দ্রুতগতিতে কাজ সম্পন্ন করতে পারা:
কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো- প্রতিটা কাজ কম্পিউটারে দ্রুতগতিতে করা সম্ভব। আমরা সাধারণত অল্প সময়ে কোন কাজ করি সাধারণত ঘন্টা- মিনিট বা সেকেন্ড হিসাবে। কারণ মানুষের পক্ষে সেকেন্ড গণনা করে কাজ করা অসম্ভব বিষয়। কিন্তু কম্পিউটার আরো অল্প সময়ে সেকেন্ড গণনা করে যেকোন কাজ সহজেই করতে পারে।
কম্পিউটার এর কাজের গতি হিসাব:
যেমন- একটি ক্যামেরার স্যুটার ১ সেকেন্ডের ১০০০ ভাগের ১ ভাগেরর কম সময়ে ছবি তুলতে সক্ষম। যার ফল সরুপ আমরা ভিডিও করতে পারি আমরা যে ভিডিও করি তা কিন্তু সেকেন্ডে ১০০০ মত ক্যামেরা স্যুটে ভিডিও তৈরী হয়। তাই কম্পিউটারের কাজকে ন্যানো সেকেন্ড হিসাবে ধরা হয়। ন্যানো সেকেন্ড হচ্ছে ১ সেকেন্ডের ১০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ সময়। হিসাবে দেখা গেছে, একটি সাধারণ কাজ করতে কম্পিউটারে ৫০ ন্যানো সেকেন্ড মত সময় লাগে। আধুনিক কম্পিউটারে দুই কোটি যোগ করতে সময় ব্যবহার করে মাত্র এক সেকেন্ডেরও কম সময়।
সেকেন্ডের ক্ষুদ্রতম একক হচ্ছে নিমরুপ:
- এক মিলি সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের ১ হাজার ভাগের ১ ভাগ।
- ১ মাইক্রো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের ১০ লক্ষ ভাগের ১ভাগ।
- এক ন্যানো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের ১ শত কোটি ভাগের ১ভাগ।
- ১ পিকো সেকেন্ড = ১ সেকেন্ডের ১ লক্ষ কোটি ভাগের ১ ভাগ।
নির্ভূলতার সাথে কাজ সম্পন্ন ক্ষমতা:
কম্পিউটার বেশি ব্যবহারের আরেকটি বিশেষ কারণ হলো নির্ভূলতার সাথে কাজ সম্পন্ন করার ক্ষমতা থাকা। যান্ত্রিক বা নির্দেশনায় যদি কোন ভূল না থাকে তাহলে কম্পিউটার কোন সময় ভূল করেনা। কম্পিউটারে অপারেটর যে প্রোগ্রাম নির্দেশনা দিবে কম্পিউটার ঠিক সেই অনুযায়ী কাজ করবে। আর যদি ব্যবহার কারী কম্পিউটারকে ভূল নির্দেশনা দেয় তাহলে কম্পিউটার তার নিদের্শ অনুযায়ী ভূল করবে, তবে কম্পিউটারের নির্ভলতার হার ১০০%।
ক্লান্তিহীন ভাবে অধিক কাজের ক্ষমতা:
প্রতিটা কম্পিউটার ক্লান্তিহীন ভাবে ঘন্টারপর ঘন্টা কাজ করতে পারে কিন্তু মানুষ কাজ করতে পারে না। এজন্য দিনে দিনে মানুষের পরিবর্তে বিভিন্ন কল কারখানায় কম্পিউটার নিয়ন্ত্ররিত বিভিন্ন যন্ত্রের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। কারণ এতে যেমন একদিকে কাজের মান ভালো হচ্ছে তেমনী বেশি কাজ করা সম্ভব হচ্ছে এবং কম্পিউটার মেশিন ব্যবহারের ফলে প্রতিটা কাজ সুক্ষ এবং দ্রুত সম্পূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে।
অধিক স্মৃতি শক্তি সংরক্ষণ সম্পূর্ণতা:
কম্পিউটারের মত আর কোন ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রের এত বেশি স্মৃতি থাকা সম্ভব নয়। কম্পিউটারে আপনার ইচ্ছ মত মেমোরী বাড়াতে কমাতে পারেন। ইচ্ছামত যেকোন প্রোগ্রাম কম্পিউটারে দিতে পারেন আবার বাদ দিতে পারেন এর কোন সীমাবদ্ধতা নেই। জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় আপনি আলাদা আলাদা মেমোরী ব্যবহার করে কম্পিউটার বিভিন্ন কাজে লাগাতে পারেন। কম্পিউটার অধিক স্মৃতি সম্পূর্ণ হওয়ায় এর ব্যবহার দিনে দিনে বেড়েই চলেছে।
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয়:
বর্তমানে প্রযুক্তির ছোয়া মানুষের জীবনে লেগে গেছে। মানুষ সকল ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। যার ফলে কম্পিউটার শুধু গবেষণার কাজে সীমাবদ্ধ নেই। সকল জ্ঞান- বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় যেমন- যৌক্তিক ও গানিতিক হিসাব কার্যের উপস্থিতি রয়েছে সেসব প্রতিটি বিষয়ের সাথে কম্পিউটা ব্যবহার করা হচ্ছে।
কারণ প্রতিটি কাজ কম্পিউটার এত সহজ করে দিয়েছে। এবং প্রতিটা বিষয় সংরক্ষণে কম্পিউটার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ফলে কম্পিউটারের ব্যবহার মানুষের কাছে দিনে দিনে ক্রমশ: বিস্তৃত হচ্ছে। নিম্ন বহুল ব্যবহৃত কম্পিউটার ব্যবহারের ক্ষেত্র গুলো উল্লেখ করা হলো:
- অনলাইন ইন্টারনেট ইমেইল,
- অফিস আদালত কার্যক্রমে,
- অনলাইন তথ্য আদান-প্রদান,
- গ্রাফিক্স ডিজাইন মিডিয়া,
- ডিজিটাল ভিডিও মিডিয়া,
- কার্টুন এ্যানিমেশন নির্মাণে,
- ওয়েবডিজাইন ডেভেলপমেন্ট,
- ডাটা ওয়ার্ড এক্সেল প্রসেসিং,
- সফ্টওয়্যার ও গেম নির্মাণে,
- ই-কমার্স-অনলাইন ব্যবসা,
- ঔষধ ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে,
- বিভিন্ন শিল্প কল কারখানায়,
- স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়ন্ত্রণে,
- পণ্যের মূল্য হিসাবে নিয়ন্ত্রণে,
- আনন্দ বিনোদন ক্ষেত্রে,
- আইন প্রয়োগ, অপরাধী সনাক্ত করণে,
- তথ্যের আদান-প্রদান,
- আবহাওয়া ও জলবায়ুর খরব,
- সামাজিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে,
- প্রতিরক্ষা যুদ্ধ ব্যবস্থায় প্রস্তুতিতে,
- পরিবহন যোগাযোগ,
- বানিজ্যিক ডাটা প্রসেসিং,
- রোবোট শ্রমিকের ব্যবহারে,
- শিক্ষা ও স্বাস্থ ক্ষেত্রে,
- ব্যাংক বিমার সেক্টরে,
- প্রকাশনা পত্রিকা শিল্পে,
- পণ্যের বার কার্ড সেক্টরে,
- বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে,
কম্পিউটার কি কি কাজে ব্যবহার হয় আশা করছি বুঝেছেন তবে উপরোক্ত বিষয় গুলো ছাড়াও হাজার হাজার ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে। এজন্য চাকুরির প্রতিটা ক্ষেত্রে কম্পিউটার জানার প্রয়োজন বাড়ছে। আমার এই সাইটে চাকুরী রিলেটেড অর্থাৎ চাকুরী পেতে আপনার যে বিষয় গুলো জানা দরকার সেগুলো নিয়ে আমার নিয়মিত বিভিন্ন আর্টিক্যাল দিতে থাকবো সুতরাং নিয়মিত এই সাইট ফলো করুন আর লেখাটি ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করুন।
সফ্টওয়্যার ছাড়া হার্ডওয়্যার কাজ করতে পারে? প্রসেরোস কীভাবে মেমরির সাথে কাজ করে এবং বর্ণনা করুন
সংরক্ষণ ব্যবস্থা.
কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ