আজ আমরা জানবো কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি, হার্ডওয়্যার কত প্রকার, মাদারবোর্ড এর কয়টি অংশ কি কি বিস্তারিত। কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হার্ডওয়্যার হলো মাদারবোর্ড। যার সাথে কম্পিউটারের প্রতিটা অংশ যুক্ত থাকে। যে সব ডিভাইস সংযোগের মাধ্যমে পূর্ণ কম্পিউটার তৈরী হয়। একটি কম্পিউটারের সকল কম্পোনেন্ট প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এ সর্ববৃহৎ সার্কিট কার্ডটির সাথে সর্ম্পক্ত থাকে, সে জন্য একে মাদারবোর্ড বা সমস্ত যন্ত্রের মিলনস্থল বলা হয়। মাদরাবোর্ড মূলত ম্পিউটারের সকল ডিভাইসের মধ্যে বাস স্পীড দ্বারা সংযোগ রক্ষা করে।
সূচীপত্র
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কি:
পিসি কম্পিউটার তৈরী করার জন্য যেসকল ডিভাইস ব্যবহার করা হয় সে সকল ডিভাইসকে হার্ডওয়্যার বলে। যেগুলো দেখা যায় কিন্তু সফট্ওয়্যার ছাড়া চালানো যায় না। যেমন- হার্ডডিস্ক, মাদাবোর্ড, র্যাম, রম, ইত্যাদি হলো কম্পিউটারের প্রধান হার্ডওয়্যার। আসুন এবার জেনেনি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার কত প্রকারের ও কি কি বিস্তারিত।
হার্ডওয়্যার কত প্রকারের ও কি কি:
কম্পিউটার তৈরীতে বিভিন্ন ধরণের হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হয়। তবে যেসকল হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয় তা সাধারণ ভাবে হার্ডওয়্যার দুই প্রকার হয়ে থাকে। যেমন-
- ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার (Internal Hardware) ।
- এক্সট্রানাল হার্ডওয়্যার (External Hardware) ।
ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার (Internal Hardware):
ইন্টারনাল হার্ডওয়্যার হলো কম্পিউটারের ভিতরে যে সকল ডিভাইস ব্যবহার করে কম্পিউটার তৈরী করা হয়। যেমন- মাদারবোর্ড হার্ডড্রাইভ, র্যাম, সিডিরম, পাওয়ার সাপ্লাই, ডিভিডি রাইটার ইত্যাদি ইন্টারনালা হার্ডওয়্যার। মোটকথা যে সকল ছোট ডিভাইসের সমন্বয়ে কোন পরিপূর্ণ ডিভাইস তৈরী হয় তাকে Internal Hardware বলে।
এক্সট্রানাল হার্ডওয়্যার (External Hardware):
এক্সট্রানাল হার্ডওয়্যার হলো কম্পিউটারের বাইরে যে সকল ডিভাইস অতিরিক্ত ভাবে যুক্ত করা হয় তাকে এক্সট্রানাল হার্ডওয়্যার বলে। যেগুলো নামের সাথে এক্সট্রনাল কথাটা উল্লেখ থাকে। যেমন- এক্সট্রানাল হার্ডডিক্স, এক্সট্রানাল ডিভিডি রাইটার, মনিটর, কিবোর্ড, মাউস, স্পিকার ক্যামেরা, মাক্রোফোন ইত্যাদি এক্সট্রানাল হার্ডওয়্যার। মোটকথা কম্পিউটারের বাইরে ব্যবহৃত সকল ডিভাইসকে External Hardware বলে।
কম্পিউটার মাদারবোর্ড এর কয়টি অংশ:
কয়েক বছর আগে অনেক ডিভাইস মাদারবোর্ড এক্সপ্রেনশন স্লটের সাথে লাগিয়ে পারস্পারিক সংযোগ দেয়া হতো। বর্তমানে এসকল ডিভাইস মাদারবোর্ডর সাথে বিল্ট-ইন অবস্থায় থাকে, যা বাজারে বিভিন্ন সিরিজের মাদারবোর্ড পাওয়া যায়। মাদারবোর্ডের উপরে ডান দিকে মেমোরী ব্যাংক বা র্যামের স্লট থাকে। এছাড়া মাদারবোর্ডের ফ্রোপি ড্রাইভ কন্টোলার, দুইটি আইডিই চেইন কানেক্টর, কীবোর্ড ও মাউস কানেক্টর, ইউএসবি কানেক্টর থাকে। এসকল কানেক্টরের সাথে রিবণ ক্যাবল দিয়ে সংযোগ দেয়া হয়। কম্পিউটারের মাদারবোর্ড হার্ডওয়্যার এর কয়টি অংশ নিচের দেওয়া হলো :
পাওয়ার সাপ্লাই (ATX Power):
বর্তমানে ব্যবহৃত প্রায় সব মাদারবোর্ডেই এটিএক্স পাওয়া সংযোগ স্লট থাকে। এটিএক্স পাওয়ার সংযোগে ৫ ভোল্ট ডিসি থেকে ১২ ভোল্ট ডিসি পর্যন্ত পাওয়ার পাওয়া যায়। মাদারবোর্ডের পাওয়ার হচ্ছে ১০+১০= ২০ পিনের হয়ে থাকে। মোটকথা সবচেয়ে বড় কানেক্টর এবং ২+২=৪ পিনের কানেক্টর হচ্ছে মাদারবোর্ডের সাথে থাকে। বর্তমানে প্রতিটা ডেক্সটপ কম্পিউটারে ATX পাওয়ার সাপ্লাই ব্যবহার করা হয়। কারণ ATX পাওয়ার সাপ্লাই সহজ ব্যবহারযোগ্য।
প্রসেসর,সিপিউ স্লট (Processor):
মাদারবোর্ডের মিডিলে একটা বড় স্কায়ার অনেক পিনের সকেট থাকে যার উপার প্রসেসর বসিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকিয়ে দেওয়া থাকে এবং প্রসেসরের উপরে একটি কুলিং ফ্যান বসানো থাকে যেন প্রসেসর গরম না হয়ে যায়। এজন্য সব সময় কুলিং ফ্যানের নিচে প্রসেসর লাগনো থাকে।
র্যাম মেমোরী স্লট (Ram):
কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের সাথে থাকে র্যাম স্লট। প্রতিটা মাদারবোর্ডের র্যামের দুইটা করে স্লট থাকে। কারণ যে কেউ ইচ্ছা করলে অতিরিক্ত ভাবে যেন র্যাম লাগাতে পারে। র্যামের কাজ হলো রানিং প্রোগ্রাম সংরক্ষণ করা। মনে করুন আপনি একটি প্রোগ্রাম রান করলেন তাহলে সেটা আগে র্যামে লোড হয়ে কাজ শুরু করবে। তারপর প্রসেসরে প্রসেসিং হয়। বেশি প্রোগ্রাম রান করতে হলে র্যামের মেমোরী বাড়াতে হবে।
হার্ডডিস্ক ডিস্ক পোর্ট (Hard disk):
কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক হলো কম্পিউটারের গোডাউন। কম্পিউটারের প্রতিটা প্রোগ্রাম ডাটা, আডিও, ভিডিও, সব হার্ডডিস্ক সংরক্ষণ করা হয়। কোন কম্পিউটারের যত বেশি হার্ডডিস্ক তার ডাটা সংরক্ষণ মেমোরী গোডাউন ততো বেশি হবে। হার্ডডিস্ক আলাদা ভাবে মাদারবোর্ডর সাথে সংযোগ করা থাকে।
বিল্টইন গ্রাফিক্স (Graphic):
প্রতিটা কম্পিউটারে গ্রাফিক্স বিল্ট-ইন ভাবে যুক্ত থাকে। তারপরেও যাদের বেশি গ্রাফিক্স প্রয়োজন হয় তাদের জন্য অতিরিক্ত গ্রাফিক্স কার্ড লাগানোর জন্য মাদারবোর্ডর সাথে গ্রাফিক্স স্লট থাকে। দরকার পড়তে ইচ্ছা মত গ্রাফিক্স কার্ড লাগানো যায়।
বিল্টইন ভিজিএ (VGA):
মাদারবোর্ডের সাথে ভিজিএ বিল্ট-ইন ভাবে থাকে। ভিজিএ Video Graphics accelerator এটা মনিটরের অউটপুটের জন্য ব্যবহার করা হয়। এরপরেও যদি কারো ভিজিএ কার্ড লাগানোর দরকার হয় এজন্য মাদারবোর্ডের সাথে অতিরিক্ত ভিজিএ পোর্ট থাকে বলা যায় ভিজিএ গ্রাফিক্স কার্ড একইভাবে কাজ করে।
ল্যান্ড লাইন পোর্ট (Landline Port):
হাই স্পিড ইন্টারনেট চালানোর জন্য একটা স্কায়ার পোর্ট মাদারবোর্ডের সাথে দেওয়া থাকে যাকে ল্যান্ড লাইন (Landline Port) বলা হয়। অপটিক্যাল ফাইবার লাইন ব্যবহার করার জন্য ল্যান্ড পোর্ট প্রয়োজন হয় যার সাথে দুইটা এলইডি লাইট থাকে হলুদ ও লাল। নেট লাইন থাকলে হলুদ লাইট জলবে আর না থাকলে লাল লাইট জলবে।
ইউএসবি পোর্ট (USB Port):
কম্পিউটারে অতিরিক্ত ভাবে কোন ডিভাইস যুক্ত করতে হলে ইউএসবি পোর্ট (USB Port) প্রয়োজন। ইউএসবি পোর্ট সাধারণত পিসির সামনে ও পেছনে দেওয়া থাকে। ইউএসবি পোর্ট ছাড়া কম্পিউটারে অতিরিক্ত কোন ডিভাইস যুক্ত করা সম্ভব নয়। যেমন- মোবাইল, প্রেনড্রাইভ, মেমোরী এক্সট্রানলা যেকোন ডিভাইস ইত্যাদি ইউএসবি পোর্ট দিয়ে পিসির সাথে যুক্ত করা হয়।
এজিপি,পিসিআই স্লট (AGP PCI):
পেন্টিয়াম ৩ ও ৪ এ দুই ধরনের মাদারবোর্ড এর জন্য এজিপি স্লট থাকে এবং বর্তমানের ব্যবহৃত ডুয়েল কোর, কোওয়াড কোর পিসিআই স্লট স্থাপন করা হয়েছে। এটি গ্রাফিক্স হার্ডওয়্যার ও সিস্টেম মেমোরীর মধ্য হাইস্পীড পাথ তৈরী করে। এছাড়াও এটিতে আলাদা ভাবে ভি-র্যাম বা ভিডিও র্যাম বসানো রয়েছে।
ড্রাইভ কন্টোলার (Drive Controller):
আগেকার মডেলেডের মাদারবোর্ডের সাথে ফ্লোপি সংযোগ থাকে এটি ৩৪ পিন বিশিষ্ট হয়ে থাকে। এ কন্ট্রোলরটি মূলত ফ্লোপি ডিস্ক ড্রাইভের জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে বর্তমানে হার্ডওয়্যারে ফ্রোপি ড্রাইভার ব্যবহার আর করা হয় না বললেই চলে।
খুব ভালো শিক্ষণীয় একটা সাইট ধন্যবাদ
আপনাকে স্বাগত
আমি জানি যে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারের মধ্যে ৩ টি অংশ থাকে। সেগুলো কি কি?
পুরো লেখাটা পড়ুন