সূচীপত্র
ক্যাপাসিটর কাকে বলে :
ক্যাপাসিটরেরে একক ‘ফ্যারাড’ বিট্রিশ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাড প্রথম ক্যাপাসিটর আবিস্কার করে। এজন্য তার নামের সাথে নামকরণ করা হয় ফ্যারাড। বর্তমানে এখন আরো তিন ধরণের ক্যাপাসিটর আবিস্কৃত হয়েছে যেগুলোর মান অনেক কম মাইক্রোফ্যারড, ন্যানো ফ্যারাড, পিকোফ্যারড একটার থেকে অন্যটা অনেক ছোট মানের। ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিটে রেজিস্টরের পরে ক্যাপাসিটরের অবস্থান। তাই আজ ক্যাপাসিটর কাকে বলে বিস্তারিত জানবো।
ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিটে ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয় কারেন্টকে ফিল্টার করার জন্য, যেন কারেন্ট সার্কিটের প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফিল্টার হয়ে একেবারে সঠিক অ্যাম্পিয়ারের কারেন্ট প্রবাহিত হয়। আপনারা ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিটে ভালোভাবে লক্ষ করলে দেখবেন যে, কারেন্ট প্রবাহের প্রতিটি ডিভাইসের সংযোগ স্থলে ক্যাপাসিটর ব্যবহার করা হয়।
এর একটাই কারণ কারেন্ট যেন ফিল্টার হয়ে সঠিক অ্যাম্পিায়ার ডিভাইসে প্রবেশ করে। এজন্য ইলেক্ট্রনিক্সে রেজিস্টরের পরে ক্যাপাসিটেরর অবস্থান। যাদের রেজিস্টর সম্পর্কে এখনো ভালো ধরণা নেই তারা অবশ্যই রেজিস্টর সম্পর্কে আমার এই আর্টিক্যালটি পড়তে ভূলবেন না। এখানে ক্লিক করুন।
ক্যাপাসিটর কি?
ক্যাপাসিটর কাকে বলে বুঝায় ইলেক্ট্রনিক্সের ফিল্টার। ক্যাপাসিটরের মধ্যে দিয়ে কারেন্ট প্রবাহ করলে ফিল্টার হয়ে সোজা রেখার মত কারেন্ট বের হয়। আপনারা হয়ত জানেন যে এসি কারেন্ট ঢেউ এর মত প্রবাহ হয়। আর ডিসি করেন্ট সোজা রেখার মত প্রবাহিত হয়। আপনারা হয়ত জানেন না যে ডিসি কারেন্টেও হালকা ঢেউয়ের মত প্রবাহিত হয় আর এই ঢেউকে সোজা করার জন্য ক্যাপাসিটর কাজ করে। মোট কথা যে ডিভাইসের মাধ্যমে কারেন্ট ফিল্টার করে সার্কিটের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কারেন্ট প্রবাহ করে তাকে ক্যাপাসিটর বলে।
ক্যাপাসিটরের সার্কিট ডায়াগ্রাম বা সাংকেতিক প্রতীক চিত্র
চিত্র: ক্যাপাসিটরের ডায়াগ্রাম
ক্যাপাসিটরের গঠন প্রনালী:
ক্যাপাসিটর তৈরী করা হয়েছে বিদ্যুৎ অপরিবাহী পদার্থের মধ্যে দুইটা ধাতব পাশাপাশি রেখে। আপনি সব ধরণের ক্যাপাসিটর ভেঙ্গে দেখবেন তার গঠন প্রনালী । কারণ জানতে হলে সরাসরি- পর্যাবেক্ষন করে দেখতে হবে। ইলেক্ট্রলাইটিক ক্যাপাসিটর ভাঙ্গলে দেখবেন দুইটা ধতবের সাথে পাতলা তুলার মত ভেজা কাগজ জড়ানো আছে। যার মাধ্যমে চার্জ সংগ্রহ হয়।
ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিটে ক্যাপাসিটরের কাজ :
ইলেক্ট্রনিক্স সার্কিটে কারেন্ট ফিল্টার করাই ক্যাপাসিটরের প্রধান কাজ। সার্কিটের ফিল্টার হিসাবে প্রতিটা ক্যাপাসিটর কাজ করে। সার্কিটের ফিল্টার হিসাবে প্রতিটা ক্যাপাসিটর মূখ্য ভূমিকা পালন করে। সার্কিটে কিছুক্ষন চার্জ ধরে রাখতে সহায়তা করে।
ক্যাপাসিটরের সতর্কতা সমূহ :
সব সময় মনে রাখবেন ক্যাপাসিটরের কারেন্ট সংরক্ষিত থাকে। বিশেষ করে এসি সার্কিটের ক্যাপাসিটরে বেশি কারেন্ট থাকে, তাই সতর্ক অবস্থায় কাজ করবেন। নতুবা অনেক সময় বড় ধরণের শক্ খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে যেমন- ফ্যানের ক্যাপাসিটরে, যেকোন এসএমপিএস এসি সার্কিটের ক্যাপাসিটর, ভোল্টেজ ষ্টাবিলাইজারের ক্যাপাসিটর ইত্যাদিতে বেশ করেন্ট থাকে। তাই আগে কারেন্ট ডিসচার্জ করতে হবে নতুবা সাবধানতার সাথে কাজ করতে হবে।
ক্যাপাসিটরের কারেন্ট ডিসচার্জ করার নিয়ম:
ক্যাপাসিটরের কারেন্ট ডিসচার্জ করার সহজ নিয়ম হলো কারেন্ট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ক্যাপাসিটরের নেগেটিভ পজেটিভ পিন শর্ট করে দিলে ডিসচার্জ হয়ে যাবে তবে একটা পটাস করে আওঁয়াজ হবে। আর যদি সার্কিটের সাথে লাগানো ক্যাপাসিটার ডিসচার্জ করতে চান তাহলে স্কু ড্রাইভার দিয়ে দুইটা পিনে চেপে ধরলে ডিসচার্জ হয়ে যাবে তবে মনে রাখবে স্কু ড্রাইভারের ধাতব অংশে কখোনো যেন হাত না ঠেকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। অনেক সময় নিজের ঘরের কারেন্টের কোন কাজ করতে গিয়ে হঠাৎ শক্ লাগে, দিয়ে আপনি ভাবেন যে, আমি মেইন সুইচ অফ করেছি তাও শক্ লাগলো কেন? কারণ কি জানেন? ক্যাপাসিটরে কারেন্ট থাকে তাই ক্যাপাসিটরের ব্যাপারে সব সময় সাবধাণ থাকবেন। বিশেষ করে এসি ভোল্টের ক্যাপসিটর থেকে।
ক্যাপাসিটরের প্রকার সমূহ:
১। ইলেক্ট্রলাইটিক ক্যাপাসিটর
ইলেক্ট্রলাইটি ক্যাপাসিটর সবচেয়ে বেশি চার্জ সংগ্রহ করতে পারে তাই এগুলো বড় মানের হয় দেখতেও বড় হয় এর নেগেটিভ পজেটিভ পোলারিটি থাকে এবং ক্যাপাসিটরের উপর ভোল্ট ও কত মাইক্রোফ্যারাড উল্লেখ করা থাকে। যে ভোল্ট দেওয়া থাকে সেটা হলো ক্যাপাসিটরের সর্বোচ্চ সহনশীল ভোল্টেজের চেয়ে ভোল্ট বেশি দিলে ক্যাপাসিটর বাস্ট হয়ে যাবে। যদি দেখেন যে ক্যাপাসিটরের গায়ে ৫০ ভোল্ট লিখা আছে তাহলে বুঝবেন এর সহনশীল ক্ষমতা হচ্ছে সর্বোচ্চ ৫০ ভোল্ট। অর্থাৎ আপনি যদি মনে করেন ৫০ ভোল্টের নিচে ভোল্ট ৬,১২, ১৬ ইত্যাদিতে ব্যবহার করবেন তা পারবেন কিন্তু৫০ এর উপরে দিলেই বাস্ট হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
চিত্র: ইলেক্ট্রলাইট ক্যাপাসিটর
২।পলিস্টর ক্যাপাসিটর, পলিস্টর ক্যাপাসিটর দেখতে খয়েরী লাল এবং আকৃতি অনেক টা চার কোনাটে। পলিস্টর ক্যাপাসিটর এসি চার্জার ইত্যাদিতে ব্যবহার করা হয় কিন্তু এর মধ্যে তেমন চার্জ ধরণ ক্ষমতা থাকে না। অপনি দেখবেন অনেক টর্চলাইটে এসব ক্যাপাসিটর চার্জ দেওয়ার জন্য চার্জার সার্কিটে ব্যবহার করা হয়।
চিত্র: পলিস্টর ক্যাপসিটর
৩।সিরামিক ক্যাপাসিটর: সিরামিক ক্যাপসিটর দেখতে অনেকটা পলিস্টর ক্যাপসিটরের মত
৪।মাইলর/মাইকা ক্যাপাসিটর, দেখতে সবুজ গায়ে বিভিন্ন নম্বার থাকে যেমন-103, 104
চিত্র: মাইলর ক্যাপাসিটর
ক্যাপাসিটরের মান বের করার নিয়ম:
ক্যাপাসিটরের কালার কোড রেজিস্টরের মত তাই যাদের রেজিস্টর কালার কোড জানা আছে তাদের জন্য এটা একেবারে সোজা শুধু একটু টেকনিক জানলেই হয়ে যাবে। বাজারে বর্তমানে যেসব ক্যাপাসিটর পাওয়া যায় তার গায়ে মান এবং ভোল্ট উল্লেখ থাকে এজন্য সমস্যা হয় না তবে কি মাইলর ক্যাপাসিটরের গায়ে সংক্ষিপ্ত কোড দেওয়া থাকে যথা- 102pf, 103pf, 104pf, 105pf, 205pf ইত্যাদি,
102=10, 00pf÷10000000 =.0001mfd 103=10,000pf÷10000000 =.001mfd 104=10, 0000pf÷10000000 =.01mfd 105=10, 00000pf÷10000000=.1mfd 203=20,000pf÷10000000 =.02mfd |
অর্থাৎ শেষের সংখ্যাটির মান যত ততটা শূন্য বসাতে হবে তার পর দশলক্ষ দিয়ে ভাগকরলেই এসব ক্যাপাসিটরের মাইক্রোফ্যারাড বের হবে। কারণ এগুলোর মান পিকে ফ্যারাডে উল্লেখ থাকে।
সূত্র:——– 103=10,000pf=.01MFD 104=10,0000pf=01MFD 203=20,000pf=02MFD |
ক্যাপাসিটরের কালার কোড:
কালার কোড | মান | টলারেন্স |
কালো (Black) | ০ | ±২০% |
খয়েরী/বাদামী (Brown) | ১ | ±১% |
লাল (Red) | ২ | ২ |
কমলা (Orange) | ৩ | ৩ |
হলুদ (Yellow) | ৪ | ৪ |
সবুজ (Green) | ৫ | ৫ |
নীল (Blue) | ৬ | ৬ |
বেগুনি (Violet) | ৭ | ৭ |
ধুসর (Grey) | ৮ | ৮ |
সাদা (White) | ৯ | ৯ |
সোনালী (Gold) | ০.১ | ±৫% |
রুপালী (Silver) | ০.০১ | ±১০% |
রং না থাকলে (Non) | – | ±২০% |
ক্যাপাসিটর পরিক্ষা করার নিয়ম:
ক্যাপাসিটর অ্যাভোমিটারের মাধ্যমে খুব সহজেই পরিক্ষা করা যায়। আর রানিং সার্কিটে ভালো কি খারাপ তা দেখলেই অনেক সময় সহজে বোঝা যায়।যেমন ক্যাপাসিটর ফাটা থাকে, উপরে ফুলে উঠে ইত্যাদি। ইলেক্ট্রলাইটিক ক্যাপাসিটর ওহম মিটারের পজেটিভ প্রান্তে ক্যাপাসিটরের পজেটিভ ধরলে চার্জ হয়ে মিটারের কাটা বেড়ে যাবে আবার আসতে আসতে কমতে শুরু করলে বুঝবেন ক্যাপাসিটর ভালো এভাবে উলট পালট করে দেখবেন।
যদি ফুল রিডিং দিয়ে থেকে যায় তাহলে নষ্ট, অথবা কোন রিডিং না দিলেও নষ্ট বলে বিবেচিত হবে। এটা পরিক্ষা নিয়ে আমি একটা ভিডিও তৈরী করবো আমার সাথে থাকুন আশা করছি আমি আপনাদের ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে অনেক কিছু ধারাবাহিক ভাবে জানাতে থাকবো। ক্যাপাসিটর নিয়ে কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হলে কমেন্ট করুন।
নতুন অনেক কিছু জানলাম ধন্যবাদ
আপনাকে স্বাগত
বিস্তারিত ভাবে লেখার জন্য ধন্যবাদ
আপনাকে স্বাগত
ক্যাপাসিটার এর ফেরাড কম বেশি হলে সমস্যা হবে?
১০ জায়গাতে আপনি ৫০ ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু ৫০ এর স্থানে ১০ ব্যবহার করতে পারবেনা। করলে পুড়ে যাবে
ক্যাপাসিটারের কারেন্ট কিভাবে ডিসচার্জ করতে হবে?
কোন মেটালের সাথে ক্যাপাসিটরের দুই কানেকশন কে শর্ট করলে ডিসচার্জ হয়ে যাবে
Hi to all, for the reason that I am in fact keen of reading this web site’s post to be upddated regularly. It contains good material.
Thank you
Good Artical.. Thank u
Thank You
ফ্যানের ক্যাপাসিটার কিভাবে লাগতে হবে
ফ্যানের সমস্যা নিয়ে একটা আর্টিকেল আছে
ট্রানজিন্টার পরিক্ষার জন্য কোন মিটার ভালো হবে?
এখন সবাই ডিজিটাল মিটার ব্যবহার করে
ট্রনজিস্টার এ টুজেড ভিডিও আছে?
এখন এথানে নেই তবে ভবিষৎতে দেওয়া হবে
খুব সন্দর লিখা হয়েছে
ধন্যবাদ
Nice post ..
Thank you
Thank you
Welcome
এত ধরণের ক্যাপাসিটার হয় ?
অনেক ধরণের ক্যাপাসিটর হয় আর্টিকেলটি পড়লে বুঝতে পারবেন
কোন সার্কিটে কত মানের ক্যাপাসিটর ব্যবহার করতে হয়?
কোন সার্কিটে কত মানের ক্যাপাসিটার ব্যবহার করবেন সেটা আপনার সার্কিটের উপর নির্ভর করবে। যেমন- আপনার সার্কিট যদি 9v হয়, তাহলে সেখানে 12v,16v,25v,50v যেকোন এটা ব্যবহার করলেই হবে। আর আর্টিকেলে ভিতরে সব লিখা আছে দেখুন।
Awesome! Its actually awesome paragraph, I have got much clear idea
on the topic of from this article.
Thank you